আত্মনির্ণয় বিপন্নতাই এখনকার মানুষের সবচেয়ে বড় অসুখ। যে-অসুখ শ্রুতি বসুকে নিরন্তর অপূর্ণতার দিকে ঠেলে দিয়েছে। মফস্বল স্কুলের ভাল ছাত্রী শ্রুতি, কলকাতার কলেজে পড়তে এসে আত্মবিস্মৃত হয়েছিল এই বিপন্নতারই অজ্ঞাত হস্তক্ষেপে। শ্রেয়সী আর দেবরূপা—শ্রুতির দুই রুমমেট—পরস্পরের প্রতি অনিয়ন্ত্রিত আকর্ষণের মাধ্যমে যে-সব মুহূর্ত রচনা করেছিল, তারই ঘূর্ণাবর্তে শ্রুতি বন্যায় বিধ্বস্ত নৌকার মতো টুকরো টুকরো ভাঙছিল। অথচ এই ভাঙন হন্তারক ছিল না। শ্রুতি, নিজের বিবিধ খণ্ডের মধ্যেই একদিন নির্ণয় করেছিল নিজেকে। তার ভাইয়ের প্রতি ভালবাসার রূঢ় ও অলঙ্ঘ্য বোধ, তার নিজের বেঁচে থাকার নির্মম অনিবার্যতা এবং তার বাবা, লতিকাপিসি বা লক্ষ্মীপিসির অসহায় আত্মসমর্পণের বাইরে হোপ—সি সি আই সংস্থার কর্মজীবন তাকে দিয়েছিল মানব জীবনের বহুমাত্রিক অস্তিত্বের খবর। অনেক ভাঙনের পর, দর্শনের পর নিজের অন্তর্গত আত্মার চান্দ্রপ্রকৃতিকে বুঝতে পেরেছিল সে। সত্যের খোঁজে, মানুষের স্বাভাবিক প্রকৃতিতে, নিজের ভেতর দৃষ্টি রেখে, সেই ছিল শ্রুতির অমোঘ নির্ণয়।
Reviews
There are no reviews yet.